মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিশেষ বৈঠক শেষে প্রচারিত ১০ দফার ইশতেহারে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ওআইসির বিশেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও বঞ্চনা বন্ধের জন্য মিয়ানমারকে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে বলেছে ওআইসি। ৫৭ দেশের মুসলিম জোট ওআইসি মিয়ানমারের ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনে পরিবর্তন এনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে দেশটির কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে। ওআইসির ওয়েবসাইট থেকে আজ সন্ধ্যায় এ তথ্য জানা গেছে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে উদ্ধৃত করে দেশটির নিউ স্ট্রেইট টাইমস পত্রিকা জানিয়েছে, ওই সভা উদ্বোধনের সময় রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের জন্য তিনি মিয়ানমারকে আহ্বান জানিয়েছেন।
ওআইসির বিশেষ ওই সভায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তিনি তাঁর বক্তৃতায় রাখাইন রাজ্যের মুসলিম জনগোষ্ঠী তাঁদের পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি থেকে বাস্তুচ্যুতির কারণে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর বারবার অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ায় গভীর উদ্বেগ জানান। বাংলাদেশে নতুন করে আশ্রয়ের জন্য আসা রাখাইনের মুসলিমদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি অবিলম্বে রাখাইনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা এবং পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য তিনি রাখাইনের মুসলিমদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। এ প্রসঙ্গে মিয়ানমারের এখনকার নাগরিকত্ব আইনে পরিবর্তন এনে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথাটি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন তিনি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ ও এর বাইরে থেকে মিয়ানমারের সব শরণার্থী এবং নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত নাগরিকদের নিরাপত্তা ও জীবিকা নিশ্চিত করে টেকসই উপায়ে তাদের জন্মভূমিতে ফিরিয়ে নিতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য ওআইসিকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকের পর গৃহীত ইশতেহারে বলা হয়েছে, রাখাইনে সহিংসতার কারণে নিরীহ লোকজনের প্রাণহানি ও হাজার হাজার রোহিঙ্গার গৃহহীন হয়ে পড়ায় ওআইসি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ইশতেহারে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অবিলম্বে শান্তি ফিরিয়ে আনতে মিয়ানমারকে আহ্বান জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি সহিংসতার জন্য অভিযুক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের আওতায় আনা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
ছবি : এএফপি, তথ্য : সংগ্রহীত
আপনার মতামত লিখুন :