কেকা ফেরদৌসী। রন্ধনশিল্পী হিসেবে তিনি সবার কাছে পরিচিত। বিভিন্ন রেসিপির কারণে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ আলোচিত। তবে সেসব আলোচনাকে তিনি মাথায় নিচ্ছেন না একদম। সেই প্রসঙ্গের পাশাপাশি সাম্প্রতিক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বললেন বিনোদন প্রতিদিনের সাথে। সাক্ষাত্কার নিয়েছেন নুরুল করিম
কেমন আছেন?
কাজের ব্যস্ততা একটু বেড়েছে। তবুও ভালো আছি।
রমজান উপলক্ষে আপনি বেশ কয়েকটি চ্যানেলে রান্নার অনুষ্ঠান করছেন। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
অনেকেই তো আমাকে ফোন দিয়ে বলে রেসিপিগুলো ভালো হচ্ছে। ওদেরকে যেন আরও নতুন নতুন রেসিপি উপহার দিই সেটিও বলছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। অনেকের ধারণা আমি চাইলে যেকোনো উপকরণ দিয়ে নতুন রেসিপি বানিয়ে ফেলতে পারি।
সেক্ষেত্রে আপনি কী মনে করেন?
আমি একজ রন্ধনশিল্পী। শুধু তাই নয়, আমি খাবার নিয়ে গবেষণাও করি। আমি নতুন যে রেসিপিগুলো দর্শকদের কাছে উপস্থাপন করি সেগুলো বাংলাদেশের মানুষ আগে কখনও দেখেনি। রেসিপি নিয়ে আমার মতো এতটা ভাবেও না কেউ। আমি গবেষণা করে বের করি কোনটার সাথে কোনটা মিক্সড করলে ভালো হবে। যদি মনে করি ভালো হবে তাহলে নতুন একটি রেসিপি করে ফেলি। এতে আমার চাওয়ার কিছু নেই।
আপনার রান্না নিয়ে ফেসবুকে অনেকদিন ধরে সমালোচনা ও ট্রল হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে কী বলবেন?
আমি ফেসবুক ব্যবহার করি না। তবে আমাকে আর আমার মজাদার রেসিপিগুলোকে নিয়ে যে ট্রল বানানো হচ্ছে সেটা আমি জানি। আমার ছেলেমেয়ে, বন্ধু, আত্মীয়স্বজনরা আমাকে এসব মেইলে পাঠাচ্ছে। যাদের কোনো কাজ নেই তারা এসব করে বেড়ায়। আসলে আমরা বাঙালিরা নিজেদের সম্মান দিতে জানি না। আমার মতো রন্ধনশিল্পী বাংলাদেশে বর্তমানে আর কে আছে! আগে সিদ্দীকা আপা ছিলেন, উনি এখন নেই। ওনার পরে তো আমারই স্থান। যারা আমাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করে তারা রান্না কাকে বলে সেটার বিন্দুমাত্রও বোঝে না। আমার সবগুলো অনুষ্ঠানে বড় বড় কোম্পানিগুলোর স্পন্সর থাকে। আমার রান্না যদি মজাদার ও সুস্বাদু না হতো তাহলে স্পন্সরগুলো এগিয়ে আসতো না। আর এ রমজানে নুডুলস নিয়ে যতগুলো রেসিপি করেছি সেগুলো কিন্তু বিশেষ ছিল। পুরো রমজানে ৮টি চ্যানেলে আমার ৯০টি নতুন রেসিপি প্রচার হবে।
এতকিছু থাকতে নুডুলস নিয়ে এত রেসিপি কেন আপনার?
নুডুলস খুব ঝটপট রান্না করে পরিবেশন করা যায়। আর এটা খুবই মজাদার একটি খাবার। লুডুলসের প্রতি আমার আলাদা একটা ভালোলাগাও রয়েছে। তবে আমি তো শুধু লুডুলস নিয়েই রেসিপি করি না, সবকিছু নিয়েই আমার রেসিপি আছে। অনেক সময় স্পন্সরগুলোর অনুরোধেও নানা রেসিপি করতে হয়।
একটি অনুষ্ঠানে আপনি নুডুলসের আচার বানিয়েছেন। যে রেসিপি নিয়ে মানুষ কখনও চিন্তাই করেনি, আপনি সেটা করে দেখালেন কিভাবে?
আমি আগেই বলেছি, রেসিপি নিয়ে আমার মতো এতটা ভাবে না কেউ। সবকিছু দিয়ে আচার হলে লুডুলস নিয়ে হবে না কেন! সেই চিন্তা থেকেই রেসিপিটা করেছি। শুধু এটি কেন, আমার সব রেসিপিতেই নতুনত্ব থাকে।
রোজা ছাড়া বাকি সময় আপনাকে চ্যানেল আই ছাড়া অন্য কোনো চ্যানেলে নিয়মিত দেখা যায় না। কারণ কী?
আসলে একটা রান্নার অনুষ্ঠান করতে যা যা লাগে সবই আমার নিজের। ক্যামেরা থেকে শুরু করে সব। তাই আমার একার পক্ষে সম্ভব হয় না ৮-১০টি চ্যানেলের জন্য অনুষ্ঠান করা। এছাড়া চ্যানেলের জন্য অনুষ্ঠান করতে তো প্রচুর সময়ের প্রয়োজন, সে সময়টা আমার নেই।
ডায়বেটিক্স রোগীদের জন্য ‘মজাদার রান্না’ নামের একটি বই লিখেছেন। কেমন সাড়া পেলেন?
আমার এ বইটি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এতটা সাড়া পাবো ভাবিনি। অনেক ডাক্তার আমার এ বইটির সুনাম করেছেন।
রান্না নিয়ে আর কী কী ভাবছেন?
আমাকে নিয়ে ট্রল বানাক আর যেটাই করুক, আমি আমার রান্না চালিয়ে যাবো। আরও নতুন নতুন রেসিপি উপহার দেওয়ার চেষ্টা করবো, যা কেউ কখনও দেখেনি।
সাক্ষাৎকার: ইত্তেফাক
আপনার মতামত লিখুন :