জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য থাকাকালে ৫ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির ভিক্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। ১৯৭৩ সালে গৃহীত প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধু গ্রন্থাগারের উন্নয়নে দুই কোটি পঞ্চাশ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৮৪ সালে কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি এনাম কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর নামে যাত্রা করে। এদেশে গ্রন্থাগার আন্দোলন বেগবানকরণ ও গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর সৃষ্টির পেছনে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর অবদান।
প্রতিমন্ত্রী আজ বিকালে রাজধানীর গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে ০৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস- ২০২১’ উপলক্ষে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর আয়োজিত ‘জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি।
প্রধান অতিথি বলেন, গ্রন্থ ও গ্রন্থাগারের আবেদন কখনো ফুরিয়ে যাবে না। আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাফল্য-ব্যর্থতা, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা ছাপার অক্ষরে মুদ্রিত থাকে বইয়ে আর এ বই সংরক্ষণ করা হয় গ্রন্থাগারে। আমরা যেন আমাদের অতীত ইতিহাস ও বর্তমান অবস্থা ভুলে না যাই, গ্রন্থাগার তা স্মরণ করিয়ে দেয়। জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস উদযাপনের মাধ্যমে গ্রন্থপ্রেমীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সভ্যতার অন্যতম বাহন হচ্ছে গ্রন্থ। গ্রন্থের ওপর ভর করেই এগিয়েছে মানব সভ্যতা। জ্ঞান-বিজ্ঞানের তীর্থকেন্দ্র সাত পাহাড়ের দেশ রােম এবং গ্রীসে গ্রন্থ ও গ্রন্থাগারের প্রচলন প্রাচীনকাল থেকেই। ১৮৫০ সালে ইংল্যান্ডে গণগ্রন্থাগার আইন পাসের পরই ইংরেজ শাসক ও দেশীয় এলিটদের সহযােগিতায় পূর্ববঙ্গে গ্রন্থাগার আন্দোলনের সূচনা হয়। ১৮৫৪ সালে যশোরে প্রতিষ্ঠিত হয় পাবলিক লাইব্রেরি। এর ধারাবাহিকতায় বগুড়ার উডবার্ন, নাটোরে ডিক্টোরিয়া লাইব্রেরিসহ পূর্ববঙ্গে ডজনখানেক গ্রন্থাগার গড়ে ওঠে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে তৃণমূল পর্যায়ে সংস্কৃতি বিকাশে কাজ করতে চায় উল্লেখ করে কে এম খালিদ বলেন, ‘উপজেলা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পে দুই মন্ত্রণালয় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে পারলে এটির দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। তিনি এ বিষয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি এমপি ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন।
আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসাবে আলোচনা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। স্বাগত বক্তৃতা করেন গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুবকর সিদ্দিক।
আপনার মতামত লিখুন :