জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে এক বাড়িতে পুলিশের অভিযানে ১ ফায়ার সার্ভিসকর্মীসহ ৫ জঙ্গি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে অভিযানকালে জঙ্গিদের হামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের চারজন আহত হয়েছেন। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আবদুল মতিন মারা যান। বাকি আহতরা হলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী, এসআই লুৎফর রহমান ও কনস্টেবল উৎপল। তাদের রামেকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নিহত জঙ্গিদের মধ্যে একই পরিবারের তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলো- বাড়ির মালিক সাজ্জাদ হোসেন (৫০), তার স্ত্রী বেলি বেগম (৪০) ও তাদের ছেলে আল-আমিন (২৫)।তাৎক্ষণিকভাবে নিহত অপর জঙ্গিদের পরিচয় জানা যায়নি। তবে অভিযানের সময় বাড়ি থেকে দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। অজ্ঞাত এই শিশুদের একজনের বয়স ৫ বছর ও অপরজনের বয়স দেড় মাস।
গোদাগাড়ী থানার ওসি হিবজুর আলম মুন্সি জানান, এখনও বাড়িটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলের এক বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। তিনি জানান, ঘিরে রাখা বাড়িতে সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পানি নিক্ষেপ করে। এ সময় একযোগে নারী ও শিশুসহ ৬ জঙ্গি বাড়ি থেকে বের হয়ে দমকল কর্মী আবদুল মতিনকে শাবলসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।এরপর সেখানে তাদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলি হয়। এক পর্যায়ে জঙ্গিরা আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে নারীসহ ৫ জঙ্গির মৃত্যু হয়।এ সময় বোমার স্প্লিন্টারের আঘাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী, এসআই লুৎফর রহমান ও কনস্টেবল উৎপল আহত হন। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।ওসি আরও জানান, বাড়িটির সামনে আরেক নারী অবস্থান নিয়েছে। পুলিশ তাকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানাচ্ছে।
এর আগে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার দিনগত রাত পৌনে ২টা থেকে সাজ্জাদ ওরফে মিষ্টুর বাড়িটি ঘিরে রাখে পুলিশ।সাজ্জাদ আলীর বাড়ি ছিল গোদাগাড়ী উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে। কয়েক বছর আগে পাশের গ্রাম মাছমারায় শ্বশুর বাড়ির পাশে এসে বাড়ি করে। সেখান থেকে চলে এসে প্রায় দুই মাস আগে হাবাসপুরে মাঠের ভেতর টিন দিয়ে একতলা এই বাড়ি তৈরি করেন। সাজ্জাদ ফেরি করে গ্রামে গ্রামে কাপড় বিক্রি করতেন।
উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ত্রিমোহনী শিবনগর গ্রামের একটি জঙ্গি আস্তানা গত ২৬ এপ্রিল থেকে দুই দিন ঘিরে রেখে অভিযান শেষে চারজন নিহত হওয়ার কথা জানায় পুলিশ। পুলিশ বলে, আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ওই চারজন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিদের একজন ছিলেন আবু কালাম ওরফে আবু (৩০)। তিনি নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :