ঘুরে ফিরে সেই জঙ্গী আতঙ্ক


F.Taj প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২৭, ২০১৭, ১:৪৯ PM / ৬৫
ঘুরে ফিরে সেই জঙ্গী আতঙ্ক

ফেরদৌস আলম
১৭ আগস্ট ২০০৫ দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলা। ধর্মের নামে জঙ্গীদের নিষ্ঠুর বর্বরতা। সারা দেশে রেড এলার্ট। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর শীর্ষনেতা শায়খ আব্দুর রহমান ও সেকেন্ডইন কমান্ড সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাইসহ অপরাপর জঙ্গীদের গ্রেফতারে র‌্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযান। অবশেষে বিগত জোট সরকারের শেষ সময়ে ৩মার্চ ২০০৬ সিলেটের সূর্যদীঘল বাড়ী থেকে জেএমবির শীর্ষনেতা শায়খ আব্দুর রহমান গ্রেফতার। মাত্র ২দিনের ব্যবধানে মুক্তাগাছা উপজেলার রামপুর গ্রামের নেওয়াজ আলীর পুত্র চাঁন মিয়ার বাড়ী থেকে গ্রেফতার হন দেশের বহুল আলোচিত জঙ্গীনেতা সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাই, সহযোগি মাসুম ও আগেরদিন ময়মনসিংহ শহরের একটি বাড়ী থেকে গ্রেফতার হন তার স্ত্রী ও শিশুপুত্র ফাহিম। চিহ্নিত করা হয় বাংলাভাইয়ের আশ্রয়দাতাদের। একে একে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হয়। শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। এক সময় শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলাভাইসহ অপরাপর জঙ্গীদের ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা হয়। ধারনা করা হয়েছিল জেএমবির শীর্ষনেতাদের গ্রেফতার ও ফাঁসি কার্যকরের মাধ্যমেই তছনছ হয়ে গেছে জেএমবির নেটওয়ার্ক।

পরবর্তী সময়ে রংপুরে জাপানী নাগরিক হোশি কুনিও, আশুলিয়ায় বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে দুর্ধষ ডাকাতি ও ৭জনকে হত্যা, পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে শিয়া সমাবেশে হ্যান্ড গ্রেনেড হামলা, গাবতলী ও আশুলিয়ায় পুলিশ হত্যা, বাড্ডায় পিডিপির সাবেক চেয়ারম্যান পীর খিজির খান হত্যা, বগুড়া শিয়া মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর গুলি করে মুয়াজ্জিন মোয়াজ্জেম হত্যা, পাবনার ঈশ্বরদীতে যাজক লুক সরকার ও দিনাজপুরে ক্যাথলিক চার্জের ইটালির ধর্ম যাজক পিয়েরো পারলাকিকে হত্যার চেষ্টা, গোপীবাগে কথিত পীর লুৎফর রহমানসহ ৬জনকে হত্যা, টিভি উপস্থাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম ফারুকীকে গলা কেটে হত্যা, সবশেষে রাজধানীর গুলশানের কুটনৈতিক পাড়ায় সুরক্ষিত হলিআর্টিসান হোটেলে ১৭জন বিদেশী নাগরিকসহ ২০জনকে হত্যা। গুলশানের জঙ্গি হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার জঙ্গিদের হামলা। এবারের টার্গেটস্থল কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ। ঈদের দিন ৭জুলাই ২০১৬ বৃহস্পতিবার সকালে জামাত শুরুর সোয়া ঘন্টা আগে সকাল পৌনে ৯টার দিকে শোলাকিয়া ময়দানের অদূরে পুলিশের চেকপোস্টে হামলা চালায় জঙ্গিরা। বোমা মেরে, চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে এমনকি গুলি করে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের হতচকিত করে দেয় জঙ্গিরা। মুহূর্তে ঘোর কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ান পুলিশ সদস্যরা। পাল্টা গুলি ছোড়েন। জঙ্গিদের গুলি, বোমা ও চাপাতির কোপে দুই পুলিশ কনস্টেবল মারা যান। মৃত্যু হয় এক জঙ্গি দলের সদস্যের। আর পাশেই নিজ বাড়িতে ঘরের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ঝর্ণা রানী ভৌমিক নামে এক গৃহবধূ।

নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। শুরু হয় একেরপর এক সাঁড়াশি অভিযান। এখনও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আত্মঘাতী ডেথস্কোয়াড সদস্যসহ তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন শিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত বহু জঙ্গী গ্রেফতার হচ্ছে। গত ২৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর শিবনগর এলাকায় জঙ্গী আস্তানার সন্ধান পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চলছে ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’। ঘুরে ফিরে সেই জঙ্গী আতঙ্ক

(ছবি সংগৃহিত)