বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত শ্রীমতি রীভা গাঙ্গুলী দাশ আজ দুপুরে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি’র সঙ্গে তাঁর সচিবালয়স্থ নিজ দপ্তরে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাতে বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দু’দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বৃদ্ধিসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নস্থল সংরক্ষণ ও জাদুঘর ব্যবস্থাপনায় ভারতের সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী প্রত্নস্থল, জাদুঘর সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে ভারতের কারিগরী সহযোগিতা কামনা করেন।
প্রতিমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে ভারতের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রশিক্ষণ, সেমিনার, ওয়ার্কশপ প্রভৃতি আয়োজনের মাধ্যমে এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে ভারত প্রস্তুত। এমনকি করোনা মহামারীর এ সময়ে অনলাইনে এ ধরনের প্রশিক্ষণ, সেমিনার, ওয়ার্কশপ আয়োজিত হতে পারে।
কে এম খালিদ বলেন, ঐতিহাসিক পানাম সিটি সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে ভারতের একদল বিশেষজ্ঞ সম্প্রতি পানাম সিটি পরিদর্শন করে গেছেন এবং আমরা তাঁদের প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছি। প্রতিবেদন পেলে এর ওপর ভিত্তি করে আমরা দ্রুত কাজ শুরু করতে চাই। অভ্যন্তরীণ সম্পদ ব্যবহার করে পানাম সিটি সংরক্ষণে বিশেষজ্ঞ দল মতামত দিয়েছে বলে শ্রীমতি রীভা গাঙ্গুলী দাশ প্রতিমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত এক অভিন্ন ইতিহাস ও সংস্কৃতির অংশীদার। মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রায় ১১,০০০ ভারতীয় সৈন্য শহিদ হয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর শহিদদের অবদান স্মরণে বাংলাদেশ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করছে। প্রতিমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মভিত্তিক যেসব সাংস্কৃতিক কর্মসূচির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে সেগুলো করোনার প্রাদুর্ভাব কমে গেলে বাস্তবায়িত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বলেন, ভারতীয় অনুদানে রবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ির অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এটি সমাপ্ত হলে বদলে যাবে কুঠিবাড়ির চিত্র। মূল স্থাপনার বাইরে ভারতীয় অর্থে নির্মিত হচ্ছে উন্নতমানের রেষ্ট হাউজ, আধুনিক লাইব্রেরি ও ক্যাফেটরিয়া কাম ডকুমেন্টেশন সেন্টার, উন্মুক্ত মঞ্চসহ আরো কয়েকটি কাজ। প্রতিমন্ত্রীকে অবহিত করে শ্রীমতি রীভা গাঙ্গুলী দাশ বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে আমরা অনলাইনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সৌভাগ্যবান যে আপনার মত একজন যোগ্য, দক্ষ ও আন্তরিক রাষ্ট্রদূতকে পেয়েছি। প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতি গাঙ্গুলীর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (ASEAN) হিসেবে পরবর্তী পদায়নের জন্য অভিনন্দন এবং শুভকামনা জানান।
সাক্ষাৎকালে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য) সাবিহা পারভীন, যুগ্মসচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :