মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার জন্য এখন পদক্ষেপ একটাই আছে। তবে সেই পদক্ষেপ কী তার কোনো ব্যাখ্যা দেননি তিনি। পিয়ংইয়ংকে থামাতে পূর্ববর্তী সরকারগুলোর আলোচনা ব্যর্থ হওযার পরই এমন হুমকি দিলেন শুরু থেকেই উত্তর কোরিয়ার বিরোধী ট্রাম্প।
শনিবার ট্রাম্প টুইটারে বলেছেন, বিগত ২৫ বছর ধরে পূর্ববর্তী সরকারগুলো উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছে, চুক্তি হয়েছে, প্রচুর অর্থ খরচ হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কলমের কালি শুকানোর আগেই চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে। মার্কিন মধ্যস্থতাকারীদের বোকা বানানো হয়েছে। কিন্তু সরি, এখন একটাই পদক্ষেপ বাকি আছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, ট্রাম্প তার বক্তব্যে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি যে, একমাত্র পদক্ষেপ বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন। তবে পিয়ংইয়ংয়ের ব্যাপারে তিনি যে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি জোরালোভাবে চিন্তা করছেন, এর মাধ্যমে সেটার কিছুটা ইঙ্গিত মেলে।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রের হুমকি থেকে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা মিত্রদের রক্ষায় প্রয়োজনে ওয়াশিংটন দেশটিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেবে। বৃহস্পতিবার শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের নিয়ে হোয়াইট হাউজে এক আলোচনায় ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঝড় উঠার আগেই তা থেমে যাবে’। এর দ্বারা তিনি কী বুঝাতে চেয়েছেন তা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, আপনারাই তা খুঁজে বের করবেন।
শনিবার নর্থ ক্যারোলিনা সফরে যাওয়ার আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তার স্পষ্ট করার মতো বেশি কিছু নেই।
তবে ঝড় উঠার আগেই তা থেমে যাবে’ ট্রাম্পের ওই বক্তব্যের পরদিন বিষয়টি নিয়ে হোয়াইট হাউজ মুখপাত্র সারা স্যান্ডার্সকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি ইরান ও উত্তর কোরিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করেন। আর ট্রাম্পের শনিবারের টুইটের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের ব্যাপারে তার বলার কিছু নেই।
প্রসঙ্গত, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনার ব্যাপারে বরাবরই অনুৎসাহী ট্রাম্প। এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সরকারের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টায় আছে ওয়াশিংটন। কিন্তু টিলারসনের বক্তব্যের পরদিনই ট্রাম্প তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, আলোচনা মানেই সময় নষ্ট।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্টের বেশ কিছু সিদ্ধান্তের বিরোধী এই টিলারসন। এ নিয়ে তার পদত্যাগের গুঞ্জনও শোনা গেছে। কিন্তু ট্রাম্প শনিবার বলেছেন, টিলারসনের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুবই ভালো, যদিও কিছু বিষয়ে তার সঙ্গে মতৈক্য রয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের এক সংসদ সদস্যের বরাত দিয়ে শনিবার দেশটির গণমাধ্যমে বলা হয়, উত্তর কোরিয়া আবারো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানতে সক্ষম। গত ২ থেকে ৬ অক্টোবর পিয়ংইয়ং সফর করেন অ্যান্টন মরোজভ নামের ওই সংসদ সদস্য। তিনি রাশিয়ার সংসদের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য বলেও জানায় আরআইএ নামের ওই সংবাদ সংস্থা।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে পিয়ংইয়ং বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। যার কিছু কিছু যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম। এ ছাড়া কিছু দিন আগে দেশটি হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষাও চালিয়েছে। আগামীতে আরও পরীক্ষা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। এ নিয়েই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজন্য বিরাজ করছে। সম্প্রতি দুই দেশের নেতারা একে অপরকে নানাভাবে হেয় করার চেষ্টা করেছেন। হয়েছে উত্তেজনাপূর্ণ বাক্য বিনিময়ও।
আপনার মতামত লিখুন :