যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম উত্তর কোরিয়া


F.Taj প্রকাশের সময় : জুলাই ২৯, ২০১৭, ১:০৯ PM / ৫৬
যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম উত্তর কোরিয়া

উত্তর কোরিয়া কর্তৃপক্ষ তাদের সর্বশেষ চালানো আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা সফল হয়েছে দাবি করে বলেছে, এটি একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি কড়া সতর্কবার্তা।

শনিবার বিবিসি জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সে দেশের সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন বলেছেন, এই পরীক্ষা এটি প্রমাণ করে যে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে এ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানতে সক্ষম।

প্রথম আইসিবিএম পরীক্ষা চালানোর তিন সপ্তাহের মাথায় উত্তর কোরিয়া গতকাল শুক্রবার এ ধরনের আরেকটি পরীক্ষা চালায়। এরপরই দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে এ সতর্কবার্তা উচ্চারণ করল।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে বেপরোয়া এবং উত্তর কোরিয়ার জন্য বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছেন।

এদিকে চীন এই পরীক্ষার নিন্দা করে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার এবং উত্তেজনা পরিহারের আহ্বান জানিয়েছে।

শুক্রবারের আইসিবিএম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে উত্তর কোরিয়া বলছে, উৎক্ষেপণের ৪৭ মিনিট পর আইসিবিএম বিস্ফোরিত হয়েছে। আর এই সময়ের মধ্যে সেটি ৩ হাজার ৭২৪ কিলোমিটার (২৩০০ মাইল) অতিক্রম করেছে।

কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, কিং জং উন গর্ব করে বলেছেন, এই পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, সমগ্র মার্কিন ভূখণ্ড আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায় রয়েছে।

দেশটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পরীক্ষা চালানো রকেটটি হোয়াওসং-১৪। এর আগে গত ৩ জুলাই একই মডেলের একটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল উত্তর কোরিয়া।

সর্বশেষ পরীক্ষা চালানো আইসিবিএম গত ৩ জুলাইয়ের ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। এর অর্থ হচ্ছে প্রাথমিকভাবে যেটি ধারণা করা হয়েছিল, এটি তার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আরো বেশি ভিতরে গিয়ে আঘাত হানতে সক্ষম।

যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম

উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিটের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও মার্কিন কর্মকর্তারা এর অবস্থান, দূরত্ব, পরিভ্রমণ পথ এবং ফ্লাই টাইম সম্পর্কে সব তথ্য জানান। এ সব তথ্য এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ করা হয়নি। তবে বেশ কিছু বিষয় তারা মোটামুটি নিশ্চিত।

যেমন- এই ক্ষেপণাস্ত্র ১০ হাজার চারশ কিলোমিটার দূরত্বে হামলা চালাতে সক্ষম। এটি উত্তর কোরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর রাসন থেকে উৎক্ষেপণ করা হলে তা নিউইয়র্ক শহরে তা আঘাত হানতে পারবে।

দ্বিতীয়তঃ, উত্তর কোরিয়া তাদের সর্বশেষ পরীক্ষ চালিয়েছে মুপিয়ং-নি এলাকা থেকে। এটি সাধারণত দেশটি যে এলাকা (কুসং) থেকে পরীক্ষা চালায় বলে ধারণা করা হয় তার থেকে ভিন্ন কোনো এলাকা। ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের এটা একেবারেই ভিন্ন একটি স্থান।

এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়েছে স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১১ মিনিটে। উত্তর কোরিয়া সচরাচর এরকম সময়ে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় না। বিষয়টি এরকম হতে পারে যে, দেশটি রাতে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপনের পরীক্ষা চালাচ্ছে। কিংবা নজরদারি চালানো দেশগুলোকে বিভ্রান্ত করতে একাধিক স্থানে উৎক্ষেপন মঞ্চ তৈরি করেছে।

এদিকে উত্তর কোরিয়ার ওই পরীক্ষা চালানোর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী ভূমি থেকে ভুমিতে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের মহড়া চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার জলসীমায় পূর্ব উপকূলে তারা এই পরীক্ষা চালিয়েছে।