সিম অপরাধী ধরতে পুলিশের কাছে বিটিআরসির চিঠি


Sharif Khan প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২, ২০১৬, ১২:১০ PM / ১২৭
সিম অপরাধী ধরতে পুলিশের কাছে বিটিআরসির চিঠি

সিম অপরাধী ধরতে এবার পুলিশের হস্তক্ষেপ চেয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সম্প্রতি পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে এ নিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বেশকিছু যুক্তি তুলে ধরেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

অবৈধ সিম বিক্রি করে যারা অপরাধ করছেন তাদেরকে দুষ্কৃৃতকারী হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় অবৈধ সিম বিক্রি আটকের পর নড়েচড়ে বসেছে বিটিআরসি। তারা নিজেরা এসব অপরাধী ধরার পাশাপাশি এখন পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছে। বিটিআরসি তাদের চিঠিতে জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের প্রয়োজনে অপরাধ দমনে সহযোগিতার উদ্দেশ্যই বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন সিস্টেম প্রবর্তিত হয়েছে এবং এর সুফল ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।

তবে কতিপয় দুষ্কৃতকারীর সাম্প্রতিক অপচেষ্টা জরুরি ভিত্তিতে দমন করা হলে তা অধিকতর সুফল বয়ে আনবে। সুতরাং এই ধরনের বেআইনি কার্যক্রম রোধের লক্ষ্যে এই অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটর, ডিস্ট্রিবিউটর এবং অবৈধ সিম বিক্রয়কারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। সিম অপরাধী ধরতে প্রথমবারের মতো বিটিআরসির পক্ষ থেকে পুলিশ প্রশাসনের কাছে এ ধরনের চিঠি পাঠানো হলো।

বিটিআরসি জানিয়েছে, অতি সম্প্রতি, ঢাকার আদাবর, নাটোর, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে এরূপ অসত্য, ভুয়া তথ্য-সংবলিত নিবন্ধিত সংযোগ বাজারে বিক্রি করা অবস্থায় ধরা পড়ে এবং বিক্রেতাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

যদি প্রাথমিকভাবে অভিযানে অনেক সিম উদ্ধারের কথা বলা হলেও তদন্ত শেষে দেখা গিয়েছে যে, কিছু সংখ্যক সিম অবৈধভাবে বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করা, যা প্রকৃতপক্ষে কতিপয় ডিস্ট্রিবিউটর, রিটেইলার অসৎ উদ্দেশ্য অথবা অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের জন্য অন্যের নামে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন করেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এসব সিমের পাশাপাশি অবৈধ ভিওআইপির কাজে ব্যবহার করা সিমও বাজারে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ধরনের প্রতিটি সিমের মূল্য ১ হাজার টাকা। এক সময় এসব সিম সচল থাকলেও এখন নেই। তবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে কেনার পর তা সচল হচ্ছে। এ ধরনের প্রায় এক কোটি সিম বিক্রি করা হচ্ছে খুচরা বাজারে। সাধারণ রিটেইলারদের মাধ্যমে অপারেটররা এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এসব সিমের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিটকের সিম। মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল ফোন অপারেটর্স অব বাংলাদেশ (এমটব) এ ধরনের ঘটনাকে অন্যতম অপরাধ হিসেবে মন্তব্য করেছে।

পুলিশের আইজিকে দেয়া চিঠিতে বিটিআরসি জানিয়েছে, বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন সিস্টেমে সিম, রিম রেজিস্ট্রেশন, রি-রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত অত্র কমিশন কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনাবলী যথাযথভাবে পালন করা/মেনে চলা হচ্ছে কিনা, প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সংযোগ ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধান করার লক্ষ্যে এবং অবৈধভাবে রেজিস্ট্রেশনকৃত সংযোগ জব্দ করার নিমিত্তে অত্র সংস্থার একটি কমিটি কাজ করছে।

সম্প্রতি লক্ষ্য করা যায় যে, বায়োমেট্রিক ভেরিভিকেশনের পর মোবাইল ফোনে ভয়ভীতি প্রদর্শন, উত্ত্যক্তকরণসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সন্তোষজনক হারে কমে গিয়েছে তবে কিছু সিম যা ব্যতিক্রম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে তা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে যাচাইকৃত হলেও প্রকৃতপক্ষে সেগুলো প্রকৃত গ্রাহকের অসাবধানতার সুযোগ নিয়ে তাদের অজান্তেই তাদের নামে নিবন্ধন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিটিআরসি কর্তৃক মোবাইল অপারেটরসমূহের দেয়া নির্দেশনা মোতাবেক প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম/রিম বিক্রি করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এ বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্ত মন্ত্রণালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বিটিআরসিকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক জব্দকৃত অবৈধ, প্রি-আক্টিভেটেড সংযোগের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে প্রেরণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছে। এখানে উল্লেখ্য, জব্দকৃত প্রতিটি প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম/রিমের জন্য নির্দিষ্ট হারে অর্থ জরিমানা সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটর হতে আদায় করা হবে।