চীন থেকে কেউ এলেই তাঁর জন্য ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করেছে হংকং। মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস ঠেকাতে নতুন এ উদ্যোগ নিয়েছে চীনের অধীনে থাকা এ অঞ্চলটি। হংকং-এ এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২৬ জন শনাক্ত হয়েছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, হংকংয়ে যাওয়া পর্যটকদের অবশ্যই হোটেল কক্ষে বা সরকার পরিচালিত সেন্টারে নিজেদের কোয়ারেন্টাইন করে রাখতে হবে। আর হংকংয়ের বাসিন্দাদের নিজেদের ঘরে থাকতে হবে। কেউ নতুন এ নিয়ম ভাঙলে তাঁর জেল-জরিমানা হবে। এ নিয়ম আজ শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে।
হংকং কর্তৃপক্ষের নতুন নিয়ম এড়াতে শুক্রবার মধ্যরাতে নির্দিষ্ট সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে চীন সীমান্তের শেনঝেন শহরে লাখো মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। আজ শনিবার নিয়ম কার্যকরের দিন সকালে হাতে গোনা কয়েকজন শেনঝেন বে-পোর্ট অতিক্রম করে হংকংয়ে ঢোকেন। এরই মধ্যে চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে এক মার্কিন নাগরিকসহ ৭২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া জাপানের এক ব্যক্তিও মারা গেছেন।
বেইজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র জানান, ৬০ বছরের ওই মার্কিন নাগরিক গত বৃহস্পতিবার উহানের জিনইনতান হাসপাতালে মারা যান। অন্যদিকে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে উহানে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনিও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে চীনে করোনাভাইরাস সংক্রমণস্থল উহানে দ্বিতীয় অস্থায়ী হাসপাতালের উদ্বোধন হয়েছে। হাসপাতালটি দুই সপ্তাহে তৈরি করা হয়েছে। এখানে দেড় হাজার রোগীর শয্যা রাখা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে, চীনে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৩৪ হাজার ৫৪৬জন। চীনের বাইরে ২৫ দেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এসব দেশে এই রোগীর সংখ্যা ২৭০জন। চীনের বাইরে এ ছাড়া হংকং ও ফিলিপাইনে একজন করে ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত ১১জন শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আজ নতুন করে পাঁচজন শনাক্ত হয়। তাঁরা সবাই ব্রিটিশ নাগরিক। তারা ফ্রান্সের পূর্বাঞ্চলে একটি বাড়িতে আছেন। এ ছাড়া জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরের কাছে পৃথক করে রাখা প্রমোদতরীর আরও ৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এ নিয়ে প্রমোদতরীটির মোট ৬৪ জন এখন এ ভাইরাসে আক্রান্ত।
তবে কিছু সুখবরও দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গত দুই দিনে এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার হার অনেকটা কমে এসেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে। সেখানে ১৭ হাজার রোগীর মধ্যে ৮২ শতাংশ সামান্য আক্রান্ত, ১৫ শতাংশ গুরুতর ও ৩ শতাংশের অবস্থা সংকটাপন্ন।
আপনার মতামত লিখুন :