চীনের হুবেহ প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ৩৬১ জন বাংলাদেশিকে রাতে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
শুক্রবার রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘৩৬১ জনের মধ্যে রয়েছে ১৮ জন শিশুসহ ১৯টি পরিবার রয়েছে, দুটি শিশু বয়স ২ বছরের নিচে। আমরা খুব অল্প সময়ে সব কিছু প্রস্তুত করেছি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চীনের উহান প্রদেশ থেকে প্রায় ৩৬১ জন বাংলাদেশে ফিরে আসার জন্য আবেদন জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাদের অতি দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে যারা ফেরত আসছে, আমাদের জানামতে তারা কেউই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নয়। তারপরও তারা পর্যবেক্ষণে থাকবেন। তাদের প্রথমে আশকোনার হজ ক্যাম্পে রাখা হবে। সেখানে তারা ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে থাকবে। এসময় তারা পরিবারের সদস্যসহ কারো সঙ্গে দেখা করতে পারবে না। পরিবারের সদস্যদের কাছে আমরা নিয়মিত খবরা-খবর পৌঁছে দেব। ’
মন্ত্রী বলেন, বিকেল পাঁচটায় আমাদের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট চীনের উদ্দেশ্যে যাবে। এই বিমানেও ৫ জন চিকিৎসক থাকবে, যারা সম্পূর্ণরূপে প্রটেক্টেড থাকবে। এছাড়া বিমানে অ্যাম্বুলেন্সের সব সুযোগ-সুবিধাও থাকবে ওই বিমানে। ৩৬১ জনকেও প্রোটেক্টেড অবস্থায় বাংলাদেশে নিয়ে আসা হবে।
তিনি বলেন, হজ ক্যাম্পে ১৪ দিন অবস্থানের সময় যদি কেউ অসুস্থ হয়, তাহলে চিকিৎসার জন্য সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
পর্যবেক্ষণের ১৪ দিনের মধ্যে আত্মীয়-স্বজনদের এসে দেখা করতে না চাওয়ার অনুরোধ জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশফেরত দেখার জন্য আত্মীয়-স্বজনরা ব্যাকুল হবে, সেটাই স্বাভাবিক। অনুরোধ করবো, কেউ তাদের সঙ্গে দেখা করতে চাইবেন না। তারা কেউ কারো সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। ‘
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সংবেদনশীল। তিনি এ ভাইরাসে আক্রান্তদের কথা শুনে অনেক আগে থেকেই বলছেন বাংলাদেশিদের ফেরত নিয়ে আসতে। আগে চীন সরকার আমাদের বলেছিল, ১৪ দিনের আগে তাদের ফেরত দেওয়া যাবে না। গতকাল সন্ধ্যায় তারা জানিয়েছে, ফেরত দেওয়া সম্ভব। সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ দিয়েছেন তাদের ফেরত আনতে।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষার্থী চীনে পড়াশোনার জন্য অবস্থান করে। এরমধ্যে অনেকে উহানে ২২টি ইনস্টিটিউটে লেখাপড়া করে। এদের মধ্যে যারা শুধু আসতে চেয়েছে, তাদেরই আমরা আনার ব্যবস্থা করেছি। ’
এসময় উপস্থিত ছিলেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আশাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :