ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচন ঘিরে রাজধানীতে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোট উৎসবের জন্য প্রস্তুত ভোটাররাও। আজ বিশেষ নিরাপত্তার মাধ্যমে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হবে ইভিএমসহ নির্বাচনী মালামাল। কাল (শনিবার) ভোট গ্রহণ। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। এবারে প্রথমবারের মতো পুরোপুরি ইভিএমে ভোট হবে দুই সিটিতে। এজন্য সবার চোখ ইভিএমের দিকে। গতকাল বিভিন্ন কেন্দ্রে অনুশীলনমূলক মক ভোটিংয়ে অংশ নিয়েছেন ভোটাররা। এ সময় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএ) ভোট প্রদানের খুঁটিনাটি বিষয় জেনেছেন তারা। নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে দুই সিটিতে চার স্তরের নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল থেকেই স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে নেমেছেন বিজিবি-র্যাব-পুলিশের সদস্যরা। মোট চার দিন নির্বাচনী মাঠে থাকবেন তারা। এ ছাড়া প্রস্তুত থাকছে বোম ডিসপোজাল স্কোয়াড-ডগ স্কোয়াড। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী গতকাল রাত ১২টা থেকে প্রচার-প্রচারণা বন্ধ হয়ে গেছে। শেষ প্রচারণায় ঘাম ঝরিয়েছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রেও থাকছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। ভোটাধিকার প্রয়োগে কোনো ভোটারকে কেন্দ্রে আসা-যাওয়ার পথে কেউ বাধা দিলে বা ভয়ভীতি, অস্ত্র, শক্তি প্রদর্শন করলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কাল দুই সিটিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ইসি জানিয়েছে, নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে বিভিন্ন সংস্থা ২ হাজার ৪৬৮টির মধ্যে ১ হাজার ৫৯৭টি কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এবার দুই সিটিতে মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত (নারী) কাউন্সিলরসহ মোট ৭৪৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে মেয়র ১৩ জন। মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অর্ধলাখ সদস্য : দুই সিটি নির্বাচনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অর্ধলাখ সদস্য। ভোটের আগে দুই দিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরদিন- মোট চার দিন মাঠে থাকবেন তারা। এ ছাড়া মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নির্বাচনী মাঠে থাকছেন বিজিবি-র্যাব-পুলিশের সদস্যরা। এ ক্ষেত্রে বিজিবি টহল টিমের সঙ্গে থাকবেন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও। এ ছাড়া উত্তর সিটির মোট ১ হাজার ৩১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ ও সাধারণ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৬ জন সদস্য থাকবেন। একইসংখ্যক সদস্য দক্ষিণের ১ হাজার ১৫০ কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বেও থাকবেন। তবে কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা চার দিনের জন্য নিয়োজিত থাকলেও অঙ্গীভূত আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা পাঁচ দিনের জন্য নিয়োজিত থাকবেন। গড়ে দুই সিটির ২ হাজার ৪৬৮ কেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার-ভিডিপির সদস্যই থাকছেন ৪১ হাজার ৯৫৬ জন। আর পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে গঠিত ১২৯টি মোবাইল ফোর্সে থাকবেন ১ হাজার ২৯০ জন, ৪৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্সে থাকবেন ৪৩০ জন, রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্সে থাকবেন ৫২০ জন। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে টিম হিসেবে দুই সিটিতে র্যাবের টিম থাকবে ১৩০টি। গড়ে ১১ জন করে এতে মোট ১ হাজার ৪৩০ জন র্যাব সদস্য থাকবেন। এ ছাড়া দুই সিটিতে র্যাবের ১০টি রিজার্ভ টিম থাকবে। আর রিজার্ভসহ দুই সিটিতে ৭৫ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবে। গড়ে ৩০ জন করে মোট ২ হাজার ২৫০ জন বিজিবি সদস্য থাকবেন। সব মিলে দুই সিটিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় অর্ধলাখ সদস্য মাঠে থাকছেন।
১ হাজার ৫৯৭টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র : ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ৬৪ দশমিক ৭১ শতাংশ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ)। এসব কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত ফোর্স নিয়োগ করবে ইসি। জানা গেছে, ঢাকার দুই সিটির ২ হাজার ৪৬৮টি কেন্দ্রের মধ্যে উত্তরে ৮৭৬ ও দক্ষিণে ৭২১ কেন্দ্র ঝুঁকিতে রয়েছে। উত্তরে সাধারণ কেন্দ্র ৪৪২ ও দক্ষিণে ৪২৯টি। ঢাকা উত্তরের রিটার্নিং অফিসার ও দক্ষিণের রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ২০১৫ সালের নির্বাচনে ঢাকার দুই সিটির ১ হাজার ৯৮২টি কেন্দ্রের মধ্যে উত্তরে ৫৮৭ ও দক্ষিণে ৯৯৮ কেন্দ্র ঝুঁকিতে ছিল।
যান চলাচল বন্ধ : ঢাকার দুই সিটি ভোট সামনে রেখে ভোটের দিন লঞ্চ ও ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করা হলেও আন্তজেলা লঞ্চ চলতে কোনো বাধা নেই। ইসি জানিয়েছে, আজ ৩১ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাস, বেবিট্যাক্সি/অটোরিকশা, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, ট্রাক, টেম্পো, অন্যান্য যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে গতকাল দিবাগত রাত ১২টা থেকে। এ নিষেধাজ্ঞা চলবে ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত। তবে মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন যানবাহনে নিষেধাজ্ঞা রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য। এ ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষকদের পরিচয়পত্র থাকতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং জরুরি কাজে বিশেষ করে অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক ও টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
সন্ত্রাসীদের ওপর পুলিশ নজর রাখবে : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘যে কোনো সময়ের চেয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে। প্রার্থীরা তাদের প্রচার চালাচ্ছেন। কোনো বাধা দেখি না। আমাদের কাছে ধরপাকড়ের তথ্য নেই। কোনো ক্রিমিনাল, সন্ত্রাসী, বোমাবাজ যদি এখানে আসে তাদের তো পুলিশ নজরদারিতে রাখবে এবং ধরবেই। কোনো বাসাবাড়িতে তল্লাশি, রেইড করা হচ্ছে না।’ ভোটকে কেন্দ্র করে ঢাকায় বহিরাগতদের প্রবেশের কোনো তথ্য নেই বলেও জানান তিনি। নির্বাচনের পর্যবেক্ষক নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বক্তব্যের বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য বিধিতে আছে তারা কেন্দ্র পরিদর্শনে যেতে পারবেন, তাদের নিবন্ধন প্রয়োজন হবে না। স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা তো বাইরে থেকে আসেননি, তারা এখানকার। বিভিন্ন দূতাবাসে যারা আছেন তারা এখানকার। তারা তালিকা দিলে আমরা পরীক্ষা করে তাদের অনুমতি দিতে পারি। সে অনুমতি আছে, গাজীপুরসহ বিভিন্ন সিটি নির্বাচনেও তারা পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাদের ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই থাকবে। তারা যেন বিধির বাইরে কোনোরকম আচরণ করতে না পারেন সে ব্যাপারে আমাদের সতর্কতা থাকবে।’আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘যে কোনো নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুরোপুরি ইসির নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা কাজ করে। তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোথাও কোনো ঝুঁকি নেই।’ গতকাল রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর রাজধানী উচ্চবিদ্যালয়ে আয়োজিত সরস্বতী পূজা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এসব বলেন তিনি। বহিরাগতরা ঢাকা ছাড়ুন : র?্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘এত দিন পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনী প্রচার চলেছে। অনেক প্রার্থীর পক্ষে তাদের আত্মীয়স্বজনরা প্রচারে অংশ নিয়েছেন। থ্যাংক ইউ ভেরি মাস। আমরা আশা করব এবার আপনারা ঢাকা ছেড়ে চলে যাবেন। অপ্রয়োজনীয় ঢাকা সফর নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।’ গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন তিনি। ঢাকাবাসীদের বাইরে বের হওয়ার সময় ছবিযুক্ত পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার কথাও বলেছেন র্যাব ডিজি। কাউন্সিলর নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনো ছিনতাইকারী বা ম্যানহোলের ঢাকনা চোরকে ভোট না দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। নির্বাচিত সবাইকে নিয়ে তারা মাদক, জঙ্গি, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিবিরোধী কাজ করতে চান। তাই ভোটারদের প্রতি দেখে-শুনে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।
সিটি নির্বাচনে নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই : ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন ঘিরে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। যেসব লোক ঢাকার বাইরে থেকে এসেছেন তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।’ গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের এসব বলেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘গত এক মাস ধরে ঢাকায় নিরবচ্ছিন্নভাবে নির্বাচনী প্রচার চলেছে। এক-দুটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়নি। প্রত্যাশা করছি যেসব রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তাদের প্রার্থীরা সুষ্ঠু পরিবেশ বজার রাখবেন। আর প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তার জন্য ডিএমপি প্রস্তুত।’
রাজধানীতে ৬৫ প্লাটুন বিজিবি : ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৬৫ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল সকাল ৯টা থেকে দুই সিটির বিভিন্ন কেন্দ্রে অবস্থান নেয় তারা। এ ছাড়া রাজধানীর সড়কগুলোয় টহল দিতে শুরু করেছেন বিজিবি সদস্যরা। শঙ্কা নিয়েই মাঠে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা : নানা বাধা ও শঙ্কার মধ্যেও গতকাল গণসংযোগের শেষ দিনে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা। প্রত্যেক প্রার্থীই ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা চালিয়েছেন। মাঠে প্রধান দুই দলেরই বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। এ নিয়েও রয়েছে বাড়তি শঙ্কা। বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা পাড়া-মহল্লায় মহড়া দিয়ে ভোটারদের মধ্যে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। তারা আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন ডিএনসিসির ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী মাসুম খান রাজেশ। তিনি জানান, ‘পুলিশ ভোটারদের হুমকি দিচ্ছে। ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। প্রতিপক্ষ আমাদের সব পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে।’ তিনি জানান, ‘বাধা উপেক্ষা করে আমি এবং আমার কর্মীরা আজ (গতকাল) পুরো ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ চালিয়েছি, ঠেলাগাড়ি প্রতীকের জোয়ার দেখেছি।’ ডিএনসিসির ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী শরিফ উদ্দীন জুয়েল জানিয়েছেন, তার নির্বাচনী এলাকায় স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগের কর্মীরা পাড়া-মহল্লায় মহড়া দিচ্ছেন। ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। তিনি জানান, তার নির্বাচনী এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি ১৮, ৩৯, ৪০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বাজার, শাহজাদপুর হয়ে গুলশান পর্যন্ত গতকাল গণসংযোগ চালান। ডিএনসিসির ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আতাউর রহমান স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি জানিয়েছেন। তিনি জানান, ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ রয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা ভোটারদের হুমকি দিচ্ছেন। তিন ঘণ্টায় এক ভোট : নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, আমি একটা নতুন ভোটার। আমি কখনো ইভিএমে ভোট দিইনি। আমি কর্মকর্তাদের সঙ্গে নতুন ভোটারের মতো কথা বলেছি। একটা ইউনিটে তারা ১২টায় এসেছেন। ৩ ঘণ্টায় মাত্র একজনকে তারা শেখাতে পেরেছেন, একজনের মাত্র ভোট নিয়েছেন। এটার ওপরে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। গতকাল শেরেবাংলানগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে মক ভোটিং দেখে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি এই ভোট কেন্দ্রের বিভিন্ন বুথ পরিদর্শন করেন। কর্মকর্তাদের কাছে ভোটদান পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান। এ ছাড়া একই সময় এই প্রতিষ্ঠানের ৮৮৪ নম্বর কেন্দ্রে মক ভোট পড়েছে ২টি। অন্যদিকে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই কেন্দ্রের একটিতে মক ভোট পড়েছে ৪টি, অপর একটিতে মাত্র ১টি।
আপনার মতামত লিখুন :