ভারতে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের গুলি, নিহত ১১


F.Taj প্রকাশের সময় : মে ২৩, ২০১৮, ১:৪৪ PM /
ভারতে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের গুলি, নিহত ১১

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে স্টারলাইট কপার কারখানা বন্ধের দাবিতে আন্দোলনকরীদের ওপর গুলি চালিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
দেশটির আনন্দবাজার ও এবিপি আনন্দ পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, তামিলনাড়ুর উপকূলবর্তী শহর থুদুকুড়িতে (তুতিকোরিন) স্টারলাইট কপার কারখানার বিরুদ্ধে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল ঠিক ১০০ দিন আগে। কারখানা বন্ধের দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
মঙ্গলবার আন্দোলনের ১০০ দিন উপলক্ষে সকাল থেকেই বড়সড় বিক্ষোভের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কয়েক হাজার মানুষ স্টারলাইট কারখানার বাইরে অবস্থান বিক্ষোভ করতে চাইলে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। জারি করা হয়েছিল ১৪৪ ধারা।
কিন্তু ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে মিছিল বের করে আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি কালেক্টরেটে পৌঁছলে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। লাঠিচার্জ ও টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে শুরু করে। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে তারা। দুটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কালেক্টরেটেও আগুন লাগানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায় পুলিশ।
তামিলনাগুর মুখ্যমন্ত্রী এদাপ্পাদি কে পালানিসামি অবশ্য দাবি করেছেন, ২০ হাজার উত্তেজিত জনতাকে অন্য কোনওভাবে আটকাতে না পেরে গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ।
তিনি নিহতদের পরিবারবর্গকে ৯ লক্ষ রুপি ক্ষতিপূরণ ও আহতদের ৩ লক্ষ রুপি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।ভারতে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের গুলি, নিহত ১১টনার নিন্দায় সরব হয়েছেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এই ঘটনাকে ‘রাষ্ট্রের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসের নৃশংস দৃষ্টান্ত’ বলে অভিহিত করেছেন।
এই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে তামিলনাড়ু সরকার। সাধারণ মানুষের কাছে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। সেই সঙ্গে ওই কারখানার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ্বাস দিয়েছে রাজ্যের এআইএডিএমকে সরকার।
গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই কারখানার বিরোধিতা করছিলেন। কিন্তু রাজ্য সরকার তাদের দাবিতে কর্ণপাত করেনি বলে আন্দোলনকারীদের দাবি। এরইমধ্য খবর আসে যে, প্রাথমিক ২৫ বছরের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কারখানা সম্প্রসারণের জন্য কর্তৃপক্ষ লাইসেন্স চেয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের মার্চে এই কারখানা থেকে গ্যাস লিক করেছিল বলে অভিযোগ। সেই গ্যাসের প্রভাবে অসংখ্য মানুষ শ্বাসকষ্ট, বমি ও গলায় সংক্রমণের মতো সমস্যার মুখে পড়েন বলে অভিযোগ। দূষণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত নিয়মভঙ্গের অভিযোগে কারখানাটি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনাল কারখানাটি ফের খোলার অনুমতি দেয়।