শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০১৭ শুরু


F.Taj প্রকাশের সময় : অক্টোবর ১১, ২০১৭, ১:১৩ PM / ৭৫
শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০১৭ শুরু

ফেরদৌস তাজ: আজ থেকে শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০১৭ শুরু হচ্ছে । সকল শিশুর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রত্যয়ে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে শিশু অধিকার সপ্তাহ উদযাপন কর্মসূচি। দিবস উদযাপনে কার্পণ্য না থাকলেও শিশু শ্রম নিরসনে সুনির্দিষ্ট কোন উদ্যোগ নেই বললেই চলে।

বাড়ছে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম:
সারাদেশে দিন দিন বাড়ছে শিশুশ্রম। বিশেষ করে শিশু শ্রমিকদের দেখা যায় কেউ কেউ চায়ের দোকানে, গাড়ীতে, মোটরসাইকেল ওয়ার্কশপে, গাড়ির গ্যারেজে, স্টিল ও কাঠের ফার্নিচারের দোকান, ভাঙ্গারীর দোকান, কসমেটিক্স দোকান, ওষুধের ফার্মেসি ও ব্যাটারির দোকানসহ বহুতল ইমারত নির্মাণকাজে নিয়োজিত।
সারা দেশের ন্যায় মুক্তাগাছা উপজেলা শহরে শিশু শ্রমিক দিন দিন বাড়ছে। প্রত্যেকেরই বয়স ৯ থেকে ১৪। আবার কারো ১৫ কিংবা ১৬ হবে। পালকি (ভাড়ায় চালিত যান) গাড়ীর হেলপার মুরাদ (১২)। বাড়ী উপজেলার লক্ষীপুরে। বাবা ঢাকায় কাজ করেন, মা বাড়ীতে থাকেন। ৩ বোন, ২ ভাই। ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া শেষ করে, সংসার চলে না তাই বাধ্য হয়ে পড়ালেখা ছেড়ে গাড়ীতে কাজ শুরু করে। বেতনের কথা জানতে চাইলে সে বলে, উস্তাদ (ড্রাইভার) খাবার দেয়, আর দিন শেষে কিছু টাকা দেয়, যা দিয়ে নিজে চলি আর বাড়িতে দিই। এটা তো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ, এ কাজ কেন করো- এমন প্রশ্নের উত্তরে সে জানায়, অন্যান্য কাজের চেয়ে এ কাজে টাকা বেশি পাই তাই করি এবং আমিও ভালো করে চলতে পারি ও পরিবারকে কিছু টাকা দিতে পারি। শুধু মুরাদ নয় তার মতো অনেক শিশু শহরের বিভিন্ন জায়গায় শিশুশ্রমের কাজ করছে। বর্তমান বিশ্বে যেখানে প্রতিটি দেশ শিশুশ্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে, সেখানে আমাদের দেশে এটি বেড়ে চলেছে। ফলে দিন দিন এই শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। অথচ বাংলাদেশ জাতিসংঘ শিশু সুরক্ষা সনদে স্বাক্ষরকারী অন্যতম একটি দেশ। শিশুশ্রমের অন্যতম কারণ হলো দারিদ্র্য। আর আমাদের দেশে ৩১ দশমিক ৬ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। এসব পরিবারের সদস্যদের মাথাপিছু আয় দৈনিক ৮০ টাকারও কম। এদের অনেকের কোনো জমি নেই। ফলে এসব পরিবারের শিশুরা তাদের পেটের ক্ষুধা নিবারণ করার জন্য ছোট থেকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ শুরু করে। তাই তাদের নিজেদের আর পরিবারের খাওয়ার জন্য শিশুরা লেখাপড়ার পরিবর্তে এ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে পিছপা হচ্ছে না।

আসুন উদযাপনের ভীড় থেকে বের হয়ে দেশকে উন্নয়নের লক্ষে শিশুদের সুরক্ষার জন্য সুন্দর একটি পৃথিবী বিনির্মাণ করি। শিশুদের অধিকার আদায়ে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করি।