স্বপ্নে দেবতা শিব নির্দেশ দিয়েছেন, জাতীয় সড়কের নিচে তার লিঙ্গ আছে! আর তা বের করে সেখানেই মন্দির বানাতে হবে।
এই নির্দেশনা পেয়ে শিবের এক ‘চ্যালা’ গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তায় গভীর গর্ত খুঁড়ে ফেলে। পরে অবশ্য সরকারি সম্পদ বিনষ্টের অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
লখন মনোজ (৩০) নামে শিবের ওই চ্যালার বাড়ি তেলঙ্গানার জনগাঁও বালনে গ্রামে। সেখানে সকলে তাকে ‘স্বঘোষিত ধর্মগুরু’ হিসাবেই চেনেন। প্রতি সোমবার শিবের পুজোর পাশাপাশি লখনের ‘ভর’ও হয়। গ্রামের অনেকের তার কাছ যাতায়াত আছে।
সম্প্রতি লখনকে নাকি শিব স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশে বলা হয়, বরাঙ্গল-হায়দরাবাদ জাতীয় সড়কের নিচে একটি শিবলিঙ্গ রয়েছে। সেটিকে খুঁড়ে বের করতে হবে। শুধু তাই নয়, ওই লিঙ্গ স্থাপিত করে একটি মন্দির নির্মাণের কথাও বলা হয় এবং তা ওই জাতীয় সড়কের উপরেই! এই নির্দেশ পেয়েই ‘কাজে’ লেগে পড়েন লখন। শিব-নির্দেশের কথা তিনি জানান গ্রামের প্রধান সিদ্দু লিঙ্গমকে। তার কাছ থেকে খবর পান পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নাগারাপু ভেঙ্কট।
শুধু ওই দু’জন নন, গ্রামের অনেকেই লখনের কথা বিশ্বাস করেন। তারপর শুরু হয় জাতীয় সড়ক খোঁড়ার কাজ। প্রায় ২০ ফুট গভীর গর্ত খোঁড়া হয়। গ্রামপ্রধান সিদ্দু জানিয়েছেন, তারা সকলেই লখনকে বিশ্বাস করেন। অনেক দিন ধরে লখন নাকি শিবলিঙ্গ ‘উদ্ধারের’ কথা তাদের বলতেন। এমনকি, তার জন্য সাহায্যও চেয়েছিলেন। তিনি আরো জানান, প্রতি সোমবার লখনের ‘ভর’ হতো। খোঁড়ার আগে মাঝে মাঝেই নাকি তিনি জাতীয় সড়কের ওই অংশে যেতেন। সেখানেও তার ‘ভর’ হতো। একটা সময় অচৈতন্যও হয়ে পড়তেন তিনি।
তবে ‘ভর’ সম্পর্কে মনোসমাজবিদ মোহিত রণদীপ বলেন, ‘এটি আসলে এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা। একে ‘ডিসোসিয়েটিভ আইডেনন্টিটি ডিসঅর্ডার’ও বলা হয়। অনেক ক্ষেত্রে অবশ্য এর একটা অন্য কারণও দেখা গিয়েছে। সামাজিক প্রতিষ্ঠা বা পরিচিতি পাওয়ার জন্য অনেককেই ‘ভর’ হওয়ার অভিনয় করতেও দেখা গিয়েছে।’
তবে যে ২০ ফুট খোঁড়া হয়েছে, সেখান থেকে কোনো শিবলিঙ্গ উদ্ধার হয়নি। ঘটনার কথা জেনে তড়িঘড়ি তা বোজানোর কাজ শুরু হয়েছে। আর সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার অভিযোগে লখনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আপনার মতামত লিখুন :