১৬ বছরের এক কিশোরীর নামে নাম রাখা হবে একটি ছোট্টো গ্রহের। গ্রহটির নাম হবে সাহিথি পিঙ্গালি। ও-ই কিশোরীর নাম এটাই। বেঙ্গালুরুর মেয়ে সাহিথি ‘ইনভেনটার অ্যাকাডেমি’-র দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। শহরের জলাশয়ের দূষিত জল নিয়ে করা সাহিথির কাজের পুরস্কার হিসেবে তার নামে নামকরণ করা হবে ওই গ্রহের। সাহিথি বর্তমানে শিক্ষানবিশ হিসেবে রয়েছে মিচিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রমেন্টাল অ্যান্ড ওয়াটার রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং সেন্টারে।
পৃথিবী থেকে অনেক আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে এই গ্রহটি। এর অবস্থান মিল্কি ওয়ে অর্থাৎ আকাশগঙ্গা ছায়াপথে। ‘এমআইটি লিঙ্কন ল্যাবরেটারি’ ও ‘সোসাইটি ফর সায়েন্স অ্যান্ড দ্যা পাবলিক’ পরিচালিত একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গ্রহটির নামকরণ করা হবে।
লস অ্যাঞ্জেলসে ‘ইনটেল ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ফেয়ার’-এ পৃথিবী ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে তিনটে বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে সাহিথি। তা ছাড়ও ১৭০০ জন প্রতিযোগীর মধ্যে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে সে। জল পরিশুদ্ধ করার মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ভিত্তিক একটি বিশেষ পদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য এই পুরস্কার পেয়েছে সাহিথি।
একটি সাক্ষাৎকারে সাহিথি বলেছে, প্রায় ৯০% জলাশয় নর্দমার জলে ভর্তি। নালার জল ঠিক ভাবে নিকাশি হয় না বলেই বড়ো বড়ো জলাশয়ের জল দূষিত হয়ে যায়। এই দূষিত জলের জন্য দেশের বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন ও মারাও যান। তাই জলের দূষণের ব্যাপারে কিছু কাজ করার কথা চিন্তা করে সে, যা পরিবেশও রক্ষা করবে।
সাহিথির তৈরি অ্যাপটি মানুষকে কোনো জায়গার জলের যাবতীয় গুণাগুণ জানতে সাহায্য করবে। শুধু তাই নয়, গুণাগুণ থেকে গোটা বিষয়টি বুঝিয়েও দেবে এই অ্যাপ। জল পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করতে হবে এক বিশেষ ধরনের ‘স্ট্রিপ’। এই অ্যাপের মোবাইল ভিত্তিক বৈদ্যুতিক সেন্সার ‘স্ট্রিপ’-এর জলে থাকা সব রকম পদার্থের উপস্থিতি আর তার পরিমাণ জানাবে। এই জলের রঙ বোঝার জন্য বিশেষ সফটওয়্যারও আছে এই অ্যাপের মধ্যেই। জল পরীক্ষার এই গোটা পদ্ধতিটা সম্পন্ন হবে ক্লাউডসোর্সিং-এর সাহায্যে। এর পর সব তথ্য জোগার করা হয়ে গেলে অ্যাপের মাধ্যমেই তা ক্লাউড প্ল্যাটফর্মে পাঠানো হবে। এই ব্যাপারটাকে সাহিথি বলেছে, ‘ওয়াটার হেলথ ম্যাপ’।
উল্লেখ্য, মানুষের নামে গ্রহের নামকরণের তালিকায় রয়েছেন বিশ্বের ১৫ হাজার মানুষ। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠতে চলেছে সাহিথি।
আপনার মতামত লিখুন :