চারদিকে জলরাশি, মাঝখানে ছোট ভূখন্ড। নাম তার মহেশখালী। লবণ উৎপাদন ও পান চাষের জন্য এ দ্বীপের পরিচিতি দেশবাসীর কাছে অনেক আগে থেকেই। এবার এ দ্বীপটি বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিতি পাবে দেশের প্রথম ডিজিটাল দ্বীপ হিসেবে। এজন্য হাতে নেয়া হয়েছে ‘কনভার্টিং মহেশখালী ইনটু ডিজিটাল আইল্যান্ড’ প্রকল্প। কোরিয়ান টেলিকম ও আইওএম গোটা দ্বীপটিকে তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় নিয়ে আসবে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ৪শ’ কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে পর্যটন শহর কক্সবাজার জেলার একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হচ্ছে মহেশখালী। ৩৬২ দশমিক ১৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কবে। চুক্তি অনুসারে কোরিয়ান টেলিকম উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যাকবোন অবকাঠামোসহ মহেশখালী ও কক্সবাজার এলাকার মানুষের চাহিদা বিশ্লেষণ করে পর্যটন, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করবে।
অন্যদিকে আইওএম এলাকায় মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ সরকারের অন্যান্য সংস্থা, কেটি ও আইওএম’র সঙ্গে সমন্বয় করে প্রকল্প বাস্তবায়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। দেশে এটিই প্রথম প্রকল্প যে, একটি দ্বীপ ভূমিকে পুরোপুরি ডিজিটাল করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে মহেশখালী নয় পুরো কক্সবাজারের মান অনেক বেড়ে যাবে। কক্সবাজার একটি আধুনিক শহরে পরিণত। তথ্য প্রযুক্তিখাতে আরো এগিয়ে যাবে কক্সবাজার।
সংস্থাটির বাংলাদেশ মিশনের প্রধান শরত দাস জানান মূলত উচ্চ গতির ইন্টারনেটের মাধ্যমে দ্বীপের মানুষের প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করবেন তারা। তিনি বলেন দ্বীপগুলোতে সুযোগ সুবিধা খুব কম থাকে, আর সে কারণে মহেশখালীতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে মানুষকে সুযোগ সুবিধা দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষা,স্বাস্থ্য ও ই-কমার্স এ তিনটি খাতে বিশেষভাবে দ্বীপবাসীকে সহায়তা করা হবে। তিনি বলেন শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক স্কুল আছে কিন্তু দ্বীপ হওয়ার কারণে যোগ্যতা সম্পন্ন লোকজন যেতে চায়না।তাই সেখানে সেবার মান বাড়ানো হবে।
যেমন ধরুন ভালো মানের শিক্ষক নেই। এখন শহরের ভালো শিক্ষকদের দিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষাদান করা হবে।স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মা ও শিশু মৃত্যুর হার একটু বেশি কারণ হলো ভালো চিকিৎসক যেতে চায়না। তিনি জানান এখন শহর থেকে চিকিৎসকরা ওখানকার রোগীদের রিপোর্ট দেখে সহায়তা দিতে পারবেন।
প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ ধরনের পরিকল্পনা কোরিয়াতে সফল হয়েছে। এখন বাংলাদেশে সেটিই প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। মহেশখালী থেকে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে আর অবৈধ অভিভাসন বন্ধের প্রযুক্তিগত সহায়তা নেয়া যাবে বলে আইওএম সেখানে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :